ফজলুর রহমান, রংপুরঃ প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও সাথী ফসল হিসেবে চাষ করছেন কলা ও বাঁধাকপি। তার পাশাপাশি আরো কয়েকজন কৃষক সাথী ফসল চাষ করেছেন। উপজেলার কৃষকরা আগে ফসলি জমিতে শুধু ধান চাষ করতেন। তাতে খুব একটা লাভ হতো না কৃষকদের। এখন তারা জমিতে চাষ করছেন সাথি ফসল। সফলতাও পাচ্ছেন। ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে একই সঙ্গে একাধিক ফসল চাষ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কৃষিখাতকে উন্নয়নমুখী ও লাভজনক করতে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ৯ ইউনিয়নের কৃষি জমিকে দুই ফসলি করার চেষ্টা চলছে। তারই ধারাবাহিকতা এই সাথি ফসল চাষ। সাথি ফসল হিসেবে প্রাধান্য পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন শাক-সবজি।
উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের উত্তর তাম্বুলপুর গ্রামের মৃত মুনছুর আলীর ছেলে কৃষক রেজাউল ইসলাম জানান, এ বছর সাথি ফসল হিসেবে কলা বাগানে বাঁধাকপি চাষ করেছি। তিনি আরো জানান, কলা বাগানে ৪ হাজার বাঁধাকপির চারা রোপন করেছি। মোটামুটি ফলন ভালো হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার টাকা বিক্রয় করেছি। সাথী ফসল বাধাকপি বিক্রয় করে আমি প্রায় ২৫ হাজার টাকা লাভ করেছি।
ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়া গ্রামের কৃষক আকবার আলী বলেন, আমি আগাম আলু ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। আগাম আলু তোলার প্রায় ২০দিন আগে একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে রোপন করেছিলাম ভূট্টা। আলু তুলে বিক্রয় করেছি এখন চলছে ভুট্টার পরিচর্যা। আশা করি আবহাওয়া ভালো থাকলে সাথী ফসল হিসেবে ভূট্টার ফলন ভালো হবে।
এলাকায় তার মতো স্থানীয় অনেকেই আলুর সঙ্গে ভুট্টা চাষ করছেন। আবার অনেকে সাথি ফসল হিসেবে রাখছেন অন্যান্য শীতকালীন সবজি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক কৃষক তাদের নিজ নিজ জমিতে সাথি ফসল চাষ শুরু করছেন। সাথী ফসল হিসেবে জমিতে রয়েছে ধনিয়া, লাল শাক, আলুর শাক, ক্ষীরা, পুঁই শাক, মরিচ ও আলুর সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে ভুট্টা চাষ। সাথি ফসলে বাড়তি খরচ খুব একটা নেই বলে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ জানান, এ ফসল চাষাবাদ করার জন্য জৈব সারই বেশি ব্যবহৃত হয়। এ কারণে বীজ কেনা ছাড়া তেমন কোনো খরচ নেই।
আরও পড়ুনঃ কুল চাষে আজিজুলের বাজিমাত
উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান জানান, কৃষক সাথী ফসল চাষে অনেকটা আগ্রহী। একই জমিতে একই খরচে দুটি ফসল চাষ হয়। ফলে কৃষক অল্প খরচে লাভবান হন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান এর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, উপজেলায় ফসলি জমিকে দুই ফসলি করার জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সাথি ফসল চাষাবাদের প্রতি কৃষকদের আগ্রহও অনেক।