হেলাল উদ্দিন, যশোর: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের মাঠে মাঠে এখন ইরি-বোরো ধান ক্ষেত পরিচর্যা ও সার প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত ইরি-বোরো ক্ষেতে সময় দিচ্ছেন তারা। রাজগঞ্জ অঞ্চলে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপনের কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে বলে জানাগেছে। এখন রাজগঞ্জ অঞ্চলের মাঠের পর মাঠ, যে দিকে চোখ যায়, সে দিকে দেখা যাচ্ছে কচি সবুজ, উঠতি বয়সের ইরি-বোরো ধানের চারা।
তাই এ অঞ্চলের কৃষকেরা বুকে রঙ্গিন স্বপ্ন ধারণ করে ইরি-বোরো ধানের ক্ষেতে কাজ করছেন।
সরেজমিনে রাজগঞ্জ অঞ্চলের বিভিন্ন মাঠে দেখা যায়- কৃষকেরা কেউ সার-কীটনাশক প্রয়োগ করছেন, কেউবা আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ আবার জমিতে পানি সেচের কাজে ব্যস্ত। এই দৃশ্য দেখে মনে হলো, কৃষকদের কাঙ্খিত ফসল ভালোভাবে ফলাতে দম ফেলানোর সময় নেই তাদের।
রাজগঞ্জের হানুয়ার গ্রামের ডাঃ সিরাজুল ইসলাম। তিনি একজন সফল মানুষ। তিনি বলেন- আমি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করিছি। ধানের জমি থেকে আগাছা পরিস্কার করা শেষ হয়েছে। এখন ধান ক্ষেতে সার প্রয়োগ করছি। চারা গাছের চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে এবার ভালো ফলন পাওয়া যেতে পারে। তবে, পোকার আক্রমন বেশি দেখা যাচ্ছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচের পানি কম উঠছে। এতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তারপরেও ভালো ফলন হবে ইনশাআল্লাহ।
রাজগঞ্জ অঞ্চলের খালিয়া গ্রামের আবু তালেব বলেন- খালিয়ার মাঠে কিছু কিছু জমিতে আগে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। এখন চারার আগাছা পরিষ্কার শেষ করে সার প্রয়োগের কাজ চলছে। তিনি বলেন- আমাদের এই সোনালী ফসল ঘরে তুলার আগ পর্যন্ত ব্যস্ততা থাকবে।
হানুয়ার গ্রামের কৃষক ইউনুচ আলী বলেন- আমরা সাধারণত কৃষির ওপর নীর্ভরশীল, তাই এই ইরি-বোরো আবাদের পুরো সময় আমাদের ভালো ফলনের আশায় পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে হয়।
স্থানীয় কৃষিবিদরা জানিয়েছেন- চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে রাজগঞ্জ অঞ্চলে বেশি ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ধান জমিতে রোপন করেছেন কৃষকরা। এজন্য ভালো ফলনসহ লক্ষ্যমাত্রা র্নিধারণ হবে এটায় আশা করছি।
কৃষিবিদরা আরও জানান- কৃষকেরা মনপ্রান দিয়ে জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করছেন এবং নিয়মিতভাবে তারা পরিচর্যার কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন। যাতে প্রাকৃতিকভাবে কোনো ক্ষতি হওয়ার আগে তারা ফসল ঘরে তুলতে পারেন।
আরও পড়ূনঃ ঠাকুরগাঁওয়ে বরই চাষে কৃষক আমানের ভাগ্য বদল
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে- চলতি বছর রাজগঞ্জ অঞ্চলে ইরি-বোরো আবাদে রড মিনিকেট, হিরা, ব্রিসহ হাইব্রিট জাতের ধান আবাদ করেছেন কৃষকেরা।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা ভগীরত চন্দ্র বলেন- এখন ইরি-বোরো ধান ক্ষেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকেরা। ইরি-বোরো চাষ আবাদে কৃষকদের সার্বক্ষণিক সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করছি আমরা। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।