মনসুর আলম খোকন, পাবনাঃ শখের বসে কবুতর পালন শুরু করে সফল হয়েছেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা বরকত আলম। আর এ শখই এখন রুপ নিয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বর্তমান যা থেকে মাসে প্রায় অর্ধলাখ টাকা উপার্জন করছেন তিনি।
খামারি বরকত আলমের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই কবুতর পালনের শখ ছিল তার। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে সময় হয়ে ওঠেনা তার। তিনি সাঁথিয়া উপজলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পাঁচ বছর আগে তাঁর ইচ্ছে আরও দৃঢ় হয়ে উঠে। আট জোড়া কবুতর দিয়ে শুরু করেন তিনি। এদের মধ্যে ছিল জারমানশিল, হলমট,এমরিকান করমানা, নান মাফট, হলমট, শখ শারলি প্রজাতির কবুতর।
এ শখকে পুঁজি করেই করমজা গ্রামে নিজের বাড়িতে গড়ে তোলেন খামার।বর্তমানে তার খামারে একশ’ তিন প্রজাতির কবুতর রয়েছে। কবুতরগুলোর মধ্যে রয়েছে এমরিমান মডনা,এজিভিসন, ড্রাগন,মারট্রক,মনডিয়ান,ট্রচার, বিউটি জার্মান, ড্রনিস পাকিস্তান, ইরানি টরি। এছাড়াও বেলজিয়াম, চুইনা, মার্কসি, জিরাগলা, সবুজগলা, লালগলা, বনারস, গিরিজল, বারহুমাসহ অন্যান্য প্রজাতির কবুতর রয়েছে তার।
এ কবুতরগুলো পালনের জন্য নিজ বাড়ির একটি আধাপাকা ঘর তৈরি করে লোহার খাঁচায় আলাদা আলাদা প্রজাতির কবুতরের খামার করেছেন। এছাড়াও খামার ঘরের বাহিরে পালন করেন অন্যান্য প্রজাতির কবুতর। সেগুলোকে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো দিচ্ছেন নিয়মিত চিকিৎসাসহ খাবার। এদিকে বরকতের খামারের খবর চারদিক ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা ও পাবনা জেলার বাহির থেকেও কবুতরপ্রেমিরা ছুটে আসেন তার খামারের দামি কবুতর কেনার জন্য। যার প্রতি জোড়ার বর্তমান দাম ১৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত। বর্তমান তার খামারে ১৮ থেকে বিশ লাখ টাকার কবুতর আছে বলে জানান তিনি।
বরকত আলম বলেন, অন্য ব্যবসার পাশাপাশি কবুতরের খামার করেছি। আমার খামারের কবুতরের খাবার পানি দেওয়া ও দেখভালর জন্য মাসিক বেতনভুক্ত দুইজন কর্মচারী রাখা আছে।কবুতর পালন করে অল্প পুঁজিতে অতি সহজেই বেকারত্ব দূর করা যায়। অন্যান্যরাও আমার মতো খামার করে সফল হতে পারেন। তিনি আরও বলেন, প্রতি মাসে সকল খরচ বাদ দিয়ে ৫০ হাজার টাকার মতো আয় থাকে তার। তবে গত তিনমাস তার খামারে অল্প কিছু কবুতর কমিয়ে দিয়েছেন খাদ্যসহ অন্যান্য জিনিসপত্রর দাম বেড়ে যাওয়ায়।
আরও পড়ুনঃ গরু হৃষ্টপুষ্টকরণে খাদ্য মিশ্রণ তৈরির কৌশল
করমজা ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হোচেন আলী বাগচি বলেন, কবুতর পালন অনেক শখের বিষয়। বরকত আলমের মতো অন্য বেকার যুবকরাও কবুতর পালনে এগিয়ে আসলে স্বাবলম্বী হতে পারবে।
সাঁথিয়া উপজলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মো. ফারুক হোসেন জানান, তথ্য অনুযায়ী সাঁথিয়া উপজলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০০ টি কবুতরের খামার রয়েছে। এছাড়াও অনেকের বাড়িতেই কমবেশি কবুতর পালন হয়ে থাকে। উপজলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে খামারিদের চিকিৎসাসহ সকল পরামর্শ দেয়া হয়। বরকত আলমের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তার কবুতর পালন দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক বেকার যুবক।