ফজলুর রহমান, রংপুরঃ রংপুরের বাজারগুলোতে সয়লাব হয়ে গেছে হাঁড়িভাঙ্গা আমে। রংপুর অঞ্চলের জেলা ও উপজেলাগুলোতে এখন হরহামেশাই মিলছে সুমিষ্ট আশবিহীন হাড়িভাঙ্গা আম। গত ১০ জুন থেকে বাজারে আসা এই আম এখন ৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৩ হাজার ৫শ ৩৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯শ ৫ হেক্টরে রয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭শ ৩০ মেট্রিক টন। শুধু হাঁড়িভাঙ্গা আমের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ২৯ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকুলে আম বিক্রি হবে প্রায় ২৫০-৩০০ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (১৯ জুন) দুপুরে রংপুর নগরীর লালবাগ রেলগেট এলাকা, শাপলা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, মর্ডান মোড়, সাত মাথা, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন এলাকার আম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সুমিষ্ট এই আম বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে। কেউবা আবার ক্যারেটে করে ২০ কেজি ৪০ কেজি করে দূর জেলায় আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠাতে কিনছেন হাঁড়িভাঙ্গা আম।
লালবাগ রেলগেট এলাকায় আম কিনতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন জানান, মেসে থাকি তাই দুই কেজি কাঁচা আম কিনলাম ১০০ টাকা দিয়ে। মনির হোসেন নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, আজ প্রথম আম কিনতে এসেছি। ৫ কেজি পাকা আম কিনলাম ৪০ টাকা করে দরে।
ওই বাজরের আম বব্যবসায়ী জিয়া বলেন, আমের বাজার মোটামুটি জমে গেছে। প্রতিদিন ভোরে আমরা পদাগঞ্জ এলাকায় গিয়ে বাগান থেকে আম ছিড়ে এনে এখানে বিক্রি করছি।
এদিকে, হাঁড়িভাঙ্গা আমের গোড়াপত্তনকারী নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ উদ্দিন পাইকার জানান, আমারও কয়েকটি আমবাগান আছে। এবার আমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে অনাবৃষ্টির কারণে আমের সাইজ একটু ছোট। গত কয়েকদিন থেকে বাজারে উঠতে শুরু করেছে এই হাঁড়িভাঙ্গা আম। দেশের দূরদূরান্ত থেকে আসা পাইকাররা আমাদের বাগান থেকে আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। আশা করছি আমের দাম বাড়বে। মিঠাপুকুরের বাগানগুলো থেকে সবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আম পাড়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, অনাবৃষ্টি হলেও এবার হাঁড়িভাঙ্গা আমের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। আম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। জেলায় হাড়িভাঙ্গা আম চাষির সংখ্যা বাড়ছে। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে বারি-৪ আমের চাষও। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও হাঁড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে প্রায় ২৫০-৩০০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বাগান মালিকদের।