পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে চাষ করেন বিদেশি কুল। আর এই বিদেশি কুল চাষেই তরুন উদ্যোক্তা আজিজুল হাকিমের ভাগ্য খুলে যায়। বর্তমানে তিনি কাশ্মিরি আপেল কুল, বল সুন্দরী ও থাই আপেল কুলের মিশ্র ফলের বাগান করেছেন। এখন কুল বিক্রি করে লাভবান তিনি। তার এমন সফলতা দেখে অন্য তরুণরাও কুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
জানা যায়, তরুণ উদ্যোক্তা মো. আজিজুল হাকিম রাজবাড়ী পৌর শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের নতুন বাজার বিসিক এলাকার বাসিন্দা। লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি কৃষি কাজে মনযোগ দেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় নিজের ১ একর জমিতে কাশ্মিরি আপেল, বল সুন্দরী ও থাই আপেল কুলের মিশ্র ফলের বাগান করেন। তারপর বদলে যায় তার জীবন। বর্তমানে তার বাগানে প্রায় প্রতিটি গাছেই থোকায় থোকায় ঝুঁলছে। আর বাজারে বিক্রি করে লাভবান আজিজুল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজিজুল হাকিমের প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল-সবুজ রঙের ফল। কুলের ভারে মাটিতে নুয়ে পড়েছে প্রতিটি গাছের ডাল। ডালগুলোকে বাঁশ দিয়ে ঠেষ দিয়ে রেখেছেন। প্রতিটি গাছ প্রায় ৩ থেকে ৪ ফুট লম্বা। পোকা ও পাখির আক্রমণ থেকে রক্ষায় বাগানের চারিপাশে মশারী জালের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ফলগুলো দেখতে আপেলের মতো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই জেলার মাটি এই ফল চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। তাই তরুণ উদ্যোক্তা আজিজুল সফলতা পেয়েছেন। আর বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে রাজবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় উচ্চফলনশীল বিদেশি জাতের কুল চাষ হচ্ছে। চলতি বছর রাজবাড়ী জেলায় ৫৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
তরুণ উদ্যোক্তা আজিজুল হাকিম বলেন, কৃষি কাজ ছোটবেলা থেকেই ভালো লাগতো। তাই পড়াশোনা শেষ করে আর চাকরির পেছনে ছুটিনি। এলাকার একজনের পরামর্শ নিয়ে রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন রাজবাড়ী হর্টিকালচার সেন্টার থেকে কুল চাষের জন্য এক দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। তারপর হর্টিকালচার সেন্টার থেকে প্রায় ২০০টি আপেল কুল, কাশ্মিরি কুল ও বল সুন্দরী কুলের চারা এনে ১ একর জমিতে রোপণ করি।
তিনি আরো বলেন, চারা রোপনের ৯ মাস পরেই ফলন এসেছে। বর্তমানে প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ৩০-৪০ কেজি ফলন পাবো। বাজারে প্রতিকেজি ৭০-৮০ টাকা কেজি ও বল সুন্দরী কুল ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
আজিজুল হাকিম আরো বলেন, এবছর পরিক্ষামূলকভাবে ১ একর জমিতে চাষ করেছি। আশা করছি এবছর ৬০-৭০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতে পারবো। আর আগামীতে আরো বড় পরিসরে বাগান করার কথা চিন্তা করছি।
আরও পড়ুনঃ টাঙ্গন নদী ভরাট করে ধান চাষের ধুম
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম রসূল বলেন, কুল চাষে অল্প সময়ে বেশি লাভবান হওয়া যায় বলে কুল চাষের তরুণদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। চলতি বছর রাজবাড়ীতে বিভিন্ন জাতের প্রায় ৫৫ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে যেয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি।
সূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার